বুধবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (৩য় অধ্যায়/সংখ্যা পদ্ধতি )

এই অংশের সম্ভাব্য প্রশ্নগুলো এবং উত্তর :
👉 সংখ্যা পদ্ধতি কাকে বলে ?
👉 সংখ্যা পদ্ধতি কত প্রকার ও কি কি ?
👉 বিভিন্ন সংখ্যা পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা। 
👉 বেস কাকে বলে ? 
👉 বিভিন্ন সংখ্যা পদ্ধতির রূপান্তকরণ পদ্ধতি ।
👉 বাইনারি যোগ বিয়োগ।
👉 চিহ্নযুক্ত সংখ্যা কাকে বলে ?
👉 ১এর ও ২এর পরিপূরক কাকে বলে ও এর গঠন ।
👉 বিভিন্ন প্রকার কম্পিউটার কোডিং সম্পর্কে ধারণা। 

        
󠀢󠀢󠀢󠀢󠀢󠀢⏩ সংখ্যা পদ্ধতি কি বা কাকে বলে ?
➤ গণনার কাজে কোনো সংখ্যা লিখে প্রকাশ করাকে বলে সংখ্যা পদ্ধতি। আর এই সংখ্যা লিখে প্রকাশ করতে যে সাংকেতিক চিহ্ন বা মৌলিক চিহ্ন ব্যবহার করা হয় তাকে অঙ্ক বলে।

⏩ সংখ্যা পদ্ধতি কত প্রকার ও কি কি ?
➤  সংখ্যার পদ্ধতি মূলত দুই প্রকার। 
     ১) পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতি :যে সংখ্যা পদ্ধতিতে সংখ্যার মান তার অবস্থানের উপর নির্ভর করে তাকে পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতি বলে। এই সংখ্যা পূর্ণ সংখ্যা হতে পারে আবার ভগ্নাংশও হতে পারে| এই সংখ্যা পদ্ধতিকে আবার চার ভাগে ভাগ করা হয়েছে। 
      ➜ বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি 
      ➜ ডেসিমাল সংখ্যা পদ্ধতি
      ➜ অক্টাল সংখ্যা পদ্ধতি
      ➜ হেক্সাডেসিমাল সংখ্যা পদ্ধতি
     ২) নন-পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতি : যে সংখ্যা পদ্ধতিতে সংখ্যার মান তার অবস্থানের উপর নির্ভর করে না তাকে নন-পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতি বলে।যেমন Ⅰ Ⅱ Ⅲ Ⅳ Ⅴ এই রোমান সংখ্যা হলো একটি নন-পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতি।

⏩ বিভিন্ন সংখ্যা পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা :
➤  এখানে মূলত পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করা হবে।
    ১) বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি : যে সংখ্যা পদ্ধতিতে দুইটি সংখ্যা ব্যবহার করা হয় এবং এর বেস ভিত্তি ২ তাকে বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি বলে। সংখ্যাগুলো হলো ০ এবং ১।
   ২) ডেসিমাল বা দশমিক সংখ্যা পদ্ধতি : যে সংখ্যা পদ্ধতিতে দশটি সংখ্যা ব্যবহার করা হয় এবং এর বেস বা ভিত্তি ১০ তাকে দশমিক সংখ্যা পদ্ধতি বলে। সংখ্যাগুলো হলো ০ থেকে ৯ ।
   ৩) অক্টাল সংখ্যা পদ্ধতি : যে সংখ্যা পদ্ধতিতে আটটি সংখ্যা ব্যবহার করা হয় এবং এর বেস বা ভিত্তি ৮ তাকে অক্টাল  সংখ্যা পদ্ধতি বলে। সংখ্যাগুলো হলো ০ থেকে ৭ ।
   ৪) হেক্সাডেসিমাল সংখ্যা পদ্ধতি : যে সংখ্যা পদ্ধতিতে দশটি সংখ্যা এবং ছয়টি ইংরেজি অক্ষর ব্যবহার করা হয় এবং এর বেস বা ভিত্তি ১৬ তাকে হেক্সাডেসিমাল সংখ্যা পদ্ধতি বলে। সংখাগলো হলো ০ থেকে ৯ এবং A থেকে F ।

⏩ বেস বা ভিত্তি কাকে বলে ?
➤ কোনো সংখ্যা পদ্ধতিতে যেকয়টি মৌলিক চিহ্ন বা সংখ্যা ব্যবহার করা হয় তার সমষ্টিকে ওই সংখ্যার বেস বা ভিত্তি বলে। যেমন : বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতিটির মোট সংখ্যা দুইটি অর্থাৎ ০ এবং ১ । তাহলে বলা যায় বাইনারির বেস বা ভিত্তি ২। আবার অকটালে ব্যবহৃরিত মোট সংখ্যা আটটি অর্থাৎ ০ থেকে ৭। তাহলে অক্টালের বেস বা ভিত্তি ৮।

⏩ Signed Number বা চিহ্নযুক্ত সংখ্যা কাকে বলে ?
➤  আমাদের বিভিন্ন হিসাব নিকাশ করতে হলে মাঝে মাঝে পজেটিভ বা নেগেটিভ সংখ্যা দরকার হতে পারে।কোন সংখ্যা পজেটিভ বা কোন সংখ্যা নেগেটিভ তা জানার জন্য সাইন বা চিহ্ন ব্যবহৃরিত হয়। যে সব সংখ্যাকে পজেটিভ বা নেগেটিভ সাইন দ্বারা চিহ্নিত করা হয় তাকে Signed Number বা চিহ্নযুক্ত সংখ্যা কাকে বলে।সাধারণ ভাবে আমরা পজেটিভ সাইন বলতে + (প্লাস) নেগেটিভ সাইন বলতে - (মাইনাস) সাইনকে বুঝি। কিন্তু কম্পিউটার বা ডিজিটাল ডিভাইসের ক্ষেত্রে যেহেতু বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় সেক্ষেত্রে সাইনের ব্যাপারটাও এই বাইনারি ডিজিট দ্বারা প্রকাশ করা হয়। এক্ষেত্রে ০ দ্বারা পজেটিভ সাইন বুঝায় এবং ১ দ্বারা নেগেটিভ সাইন বুঝায়। যেমন:৮ বিট রেজিস্টারের জন্য নিচের বাইনারি যোগটি লক্ষ্য করি।
                             11011001
                             10001101
                            101100110
ফলাফলের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে সর্ব বামে ৮ বিটের পর অতিরিক্ত একটি বিট ১ আছে। সুতরাং বলা যে বাইনারি এই ফলাফলটি ঋণাত্মক। যদি ফলাফলে অতিরিক্ত বিট ০ হয় তবে সেটা ধনাত্মক।

⏩ ১এর ও ২এর পরিপূরক কাকে বলে ও এর গঠন:
➤  ১এর পরিপূরক বা 1's complement : কোনো বাইনারি সংখ্যার ০ এর স্থানে ১ এবং ১ এর স্থানে ০ বসালে যে সংখ্যা পাওয়া যায় তাকে ১এর পরিপূরক বা 1's complement বলে। যেমন:10110011 এর ১এর পরিপূরক হবে 01001100।
➤  ২এর পরিপূরক বা 2's complement : কোনো বাইনারি সংখ্যাকে ১এর পরিপূরক করে তার সাথে ১ যোগ করলে যে সংখ্যা পাওয়া যায় তাকে ২এর পরিপূরক বা 2's complement। যেমনঃ 10101011 এর ২এর পরিপূরক করতে হলে প্রথমে এটাকে 1's করতে হবে ।
                                   1's = 01010100
                                                         + 1  
                                   2's  = 01010101

[পরবর্তীতে 2's complement পদ্ধতিতে যোগ বিয়োগ সমস্যার নিয়ে আলোচনা করা হবে।]

⏩  কোড কি ? বিভিন্ন প্রকার কম্পিউটার কোডিং সম্পর্কে ধারণা।
➤  কোড: কম্পিউটার যেহেতু বাইনারি সংখ্যা বুঝে তাই প্রতিটি বর্ণ ,সংখ্যা বা বিশেষ চিহ্ন কম্পিউটারকে বুঝাতে এই বাইনারি সংখ্যার বিন্যাসের জন্য যে  ইউনিক বা অদ্বিতীয় সংকেত তৈরী করা হয় তাকে কোড বলে ।
➤  বিভিন্ন প্রকার কোডের ধারণা:
   ১)BCD (Binary Coded Deciaml): কোনো ডেসিমাল সংখ্যাকে চার বিটের বাইনারিতে প্রকাশ BCD কোড বলে।যেমন,যদি বলা হয় 257 সংখ্যার BCD কত ?
                                         8           9              7
                                                   ↴            
                                     1000      1001      0111

 ২)EBCDIC (Extended Binary Coded Deciaml Interchange Code) : EBCDIC কোড হলো BCD কোডের উন্নত রূপ। BCD কোডের কিছু সীমাবদ্ধতা থাকার কারণে EBCDIC কোড তৈরী করা হয়।BCD কোড মাত্র ৬৪ বর্ণ সমর্থন করতো যা অনেক সমস্যার সৃষ্টি হয়। এই সমস্যা দূর করার জন্য ৪ বিটের কোডকে বর্ধিত করে ৮ বিট করা হয় যা ২৫৬ টি আলাদা বর্ণকে সমর্থন করে ।
৩)  Alphanumeric Code : শব্দ থেকেই বুঝা যায় এটি সংখ্যা,বর্ণ (0-9, A-Z, a-z) দ্বারা গঠিত এই কোড। তবে এই কোড শুধু বর্ণ বা সংখ্যা নিয়ে গঠিত নয় ।বিভিন্ন চিহ্ন যেমন @!#$%^&+/- এই কোডের অন্তর্ভুক্ত ।
৪)  ASCII (American Standard Code for Information Interchange  ) : অন্যান্য সকল বর্ণ প্রকাশকারী কম্পিউটার কোডের মতো ASCII কোডেও নির্দিষ্ট কিছু বিট প্যাটার্ণের মাধ্যমে একটি করে বর্ণ প্রকাশ করা হয় । ASCII কোড প্রতিটি বর্ণ ৭ বিট দীর্ঘ, যা দ্বারা ১২৮ টি বর্ণ প্রকাশ করা যায় ।
৫)  Unicode : বিশ্বের সকল ভাষার বর্ণমালা এবং চিহ্নসমূহকে একটি মাত্র কোড রূপান্তরিত করতে এই Unicode পদ্ধতির আবিষ্কার হয়েছে ।এটি ১৬ বিটের কোড , যা দ্বারা মোট ৬৫৫৩৬ টি অদ্বিতীয় বর্ণ উপস্থাপন করা যায়।

[বিভিন্ন সংখ্যা পদ্ধতি রূপান্তর এবং যোগ বিয়োগ বুঝানোর জন্য পরবর্তীতে ভিডিও আপলোড করা হবে ]
                                                 

                                   
                                   
















                                                 

                                   
                                   
















                                                   

                                     
                                     
















৫টি মন্তব্য: